ডেথ ওভারে আজও লিখে চলেছেন মৃত্যু পরোয়ানা, আইপিএলের অবিশ্বাস্য রেকর্ড ৩৮ বছরের ক্রিকেটার!


কলকাতা: কেউ ব্যাট দিয়েই লেখেন প্রেমের কবিতা। সারা বিশ্ব অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখে তাঁদের কভার ড্রাইভ। সচিন তেন্ডুলকর, ব্রায়ান লারারা যেমন ছিলেন ‘প্রেমিক’ ব্যাটার। কেউ ব্যাট দিয়েই লেখেন মৃত্যু পরোয়ানা। গুটিকতক বল তাঁদের থামাতে পারে না। পরোয়া করেন না উল্টো দিকের বোলারকে। ডেথ ওভারগুলোয় শুধু তাঁরা জয়ের রাস্তা খোঁজেন। বিপক্ষের দরজা খুলে জয় ঢুকে পড়েছে, বুঝেও যাঁরা ছিনিয়ে নেন সুখ। টি-টোয়েন্টির দুনিয়ায় এমন অনেকেই আছেন। কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে এই কাজ গত ১৭ বছর ধরে করে চলেছেন, এমন কাউকে তুলে ধরা বেশ মুশকিল কাজ। আর কাউকে খুঁজতে হবে না। এ বার কুড়ি ওভারের ক্রিকেট যতদিন থাকবে, তিনি থেকে যাবেন মনে। ৩৮ বছরেও ঠান্ডা মাথায় খুনে মেজাজে টিমকে জেতাচ্ছেন দীনেশ কার্তিক!

পঞ্জাবের বিরুদ্ধে বিরাট কোহলি আউট হতেই ম্যাচ ঢলে পড়েছিল শিখর ধাওয়ানদের দিকে। প্রথম ম্যাচেই চেন্নাইয়ের কাছে। আরসিবি ততক্ষণে মনে মনে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে দ্বিতীয় হারের। ঠিক সেখান থেকেই অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিলেন কার্তিক। রিঙ্কু সিংয়ের তখনও জন্ম হয়নি। ক্রিকেট স্রেফ ধোনির মতোই এক ফিনিশারে মুগ্ধ ছিল। তখনই উঠে এসেছিলেন দীনেশ কার্তিক। কেকেআরের হয়ে চালিয়ে গিয়েছিলেন এই একই তাণ্ডব। এখন আরসিবির হয়ে করছেন। ১০ বলে ২৮ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে গেলেন। তিনটে চার ও দুটো ছয়ের বিস্ফোরণে। ১৭ থেকে ২০ ওভার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে স্পর্শকাতর মুহূর্ত। এই সময় জয় কেউ হাতছাড়া করে, কেউ জয় ছিনিয়ে নেয়। কার্তিক যতদিন থাকবেন, তাঁর টিমের ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা নব্বই শতাংশ থাকবে। এই ১৭-২০ ওভারেই সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেট কার্তিকের। সেই সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানও তাঁর।

পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১০ বলে নট আউট ২৮ করেছেন ২৮০ স্ট্রাইক রেটে। ১৭-২০ ওভারে কার্তিকের গড় স্ট্রাইক রেট ২০৩.২৭। সব মিলিয়ে ওই সময় তিনি করেছেন ৩৭২ রান। কার্তিকের থেকে বেশি রান রয়েছে একমাত্র ,সিমরন হেটমেয়ারের, ৩৮৩। ওয়েস্টে ইন্ডিজের ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট অবশ্য কার্তিকের থেকে কম, ১৯৭.৪২। বোঝাই যাচ্ছে, ডেথ ওভারগুলোয় কতটা আগ্রাসী ব্যাটিং করেন তিনি। বয়স যত বাড়ছে, তত যেন ধারালো হচ্ছে। ওই তালিকায় তিন নম্বরেই রয়েছেন কেকেআরের নতুন নায়ক রিঙ্কু, ৩৫১ রান করেছেন ১৯৫ স্ট্রাইক রেটে।

ম্যাচের পর কার্তিক অবশ্য বলেছেন, ‘ম্যাচ কিন্তু কোনও ভাবেই আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। তবে পরের দিকে আমরা নিজেদের মতো এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলাম। আমাদের আসলে একটা পার্টনারশিপ দরকার ছিল। মহীপাল লোমরোর সঙ্গে সেটা তৈরি হয়েছিল। মহীপালই চাপটা কমিয়ে দিয়েছিল আমার। খুব ভালো করে জানতাম, হর্ষল প্যাটেল চালাক বোলার। তাই ওর বল শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে শট নিচ্ছিলাম।’

Leave a Reply