স্মৃতি মান্ধানা, হরমনপ্রীত কৌর, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি…। সকলের প্রাথমিক পরিচয়, তাঁরা ভারতীয় দলের ক্রিকেটার। নিজেদের মতো করে দেশকে গর্বিত করছেন। মেয়েদের ক্রিকেটে বড় আপশোস, সিনিয়র টিম এখনও আইসিসি ট্রফি জিততে পারেনি। তবে উদ্বোধনী অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। ওয়ান ডে ফরম্যাট হোক বা টি-টোয়েন্টি, আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালেও উঠেছে ভারত। একাধিক বার ট্রফির খুব কাছ থেকে ফিরতে হয়েছে। সামনেই মেয়েদের এশিয়া কাপ। সাত বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত অভিযান শুরু করবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও রয়েছে। রোহিতরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, দীর্ঘ অপেক্ষার ইতি হয়েছে। হতেই পারে, এ বার স্মৃতি মান্ধানাদের অপেক্ষারও ইতি হল! তার আগে একটা গল্পে ফেরা যাক। বন্ধুত্বের গল্প।
ভারতীয় পুরুষ দলের ক্রিকেটার হোক বা মহিলা দল। পারস্পরিক সম্পর্ক দুর্দান্ত। সেটাও ক্রিকেটের সৌজন্যেই। এই সম্পর্কগুলোই বুঝিয়ে দেয়, ক্রিকেট শুধুই খেলা নয়। ফেরা যাক চার বছর আগের একটু হতাশার মুহূর্তে। কোভিডের কারণে পুরো দেশে লকডাউন। সকলেই দু-স্বপ্নের মধ্যে কাটিয়েছেন। আবার অনেকে নানা চিন্তার মাঝেও নিজেদের মতো করে ভালো থাকার রাস্তা খুঁজে নিয়েছেন। সমস্ত খেলাও তখন বন্ধ। ক্রীড়াবিদরা ঘরবন্দি। আর সে সময়, ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশ অনেকেরই।
ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের রকস্টার জেমাইমা রডরিগজ একটি শো শুরু করেন। ডাবল ট্রাবল। ভার্চুয়াল ডিসকাশন। এতে জেমাইমার সঙ্গী স্মৃতি মান্ধানা। ডাবল ট্রাবলেই একটি এপিসোডে অতিথি স্মৃতি-জেমির প্রিয় রোহিত ভাইয়া। বোনের মতো দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে আড্ডায় মেতে ওঠেন রোহিত শর্মাও। তাঁদের সঙ্গে নানা অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। এর মধ্যে মজার ঘটনাও রয়েছে। তেমনই একটা অভিজ্ঞতা নেট প্র্যাক্টিস।
রোহিত শর্মাকে নেট প্র্যাক্টিসের প্রসঙ্গ তুলেই নিজের একটি অভিজ্ঞতা শোনান স্মৃতি মান্ধানা। তাঁর একবার সুযোগ হয়েছিল মহম্মদ সামির বিরুদ্ধে নেটে ব্যাট করার। মেয়েদের ক্রিকেটে পেসাররা সাধারণত ১১০-১১৫ কিমি/ঘণ্টা গতিতে বোলিং করে থাকেন। কালে-ভদ্রে গতি ওঠে ১২০ কিমি/ঘণ্টা। স্বাভাবিক ভাবেই সামির বোলিংয়ে ব্যাট করা স্মৃতির পক্ষে অনেকটাই কঠিন। যদিও সামি কথা দেন, ১২০ কিমির মধ্যেই স্পিড রাখবেন। স্মৃতি ভয়ে ভয়েই নেটে স্টান্স নেন। সামির সুইং কোনও ভাবে সামলে দেন দু-তিনটি ডেলিভারি। এরপরই অবশ্য লাইন মিস। থাইয়ে বল লাগে।
রোহিত শর্মাকে সেই অভিজ্ঞতা হাসতে হাসতে শুনিয়ে স্মৃতি জানান, সেই একটি ডেলিভারির আঘাতের জায়গায় রং বদলাতে থাকে, দীর্ঘদিন সেই চিহ্ন থেকে গিয়েছিল। রোহিত শর্মাও সামিকে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শোনান। আসলে, বোলারদের অনেকেরই বেশির ভাগ সময় খুব রাগে থাকেন। তাঁদের ধারনা ব্যাটারদের কাজটা তুলনামূলক সহজ। রোহিত সেটিকে সমর্থনও করেন। বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচে সারাদিনে ২০-২৫ ওভার বোলিং করা সহজ নয়।
সেই অভিজ্ঞতা থেকেই রোহিত বলেন, ‘সামি সবসময়ই রেগে থাকে। প্র্যাক্টিসের নেটে ঘাস থাকে। সামিকে বলি বাউন্সার দিতে না। কিন্তু ও সেটাই বেশি করে। সমস্ত রাগ যেন নেটে বের করে।’ সামিকে নিয়ে মজার গল্প শেষ হতেই স্মৃতি ও জেমি একসঙ্গে জানান, তাঁদের ড্রেসিংরুমেও একই পরিস্থিতি। বোলাররা তাঁদেরও বলেন, তোমাদের আর কী, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকো, শট খেলো চলে আসো। এমন নানা ঘটনা, অভিজ্ঞতায় জমে ওঠে আড্ডা…।