ওয়ান ডে বিশ্বকাপ দু-বার, টি-টোয়েন্টিও। এ বার ভারতের লক্ষ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। এখনও অবধি দু-বার এই প্রতিযোগিতা হয়েছে। চলছে তৃতীয় সংস্করণ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী সংস্করণে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারে। ফলে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি গত সংস্করণেও। টানা দুর্দান্ত খেলে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে বাড়তি নজর ভারতীয় দলের। তার আগে টিমে এন্ট্রি হতে পারে রিঙ্কু সিংয়ের? অসম্ভব নয়।
ভারতের টি-টোয়েন্টি দলে কার্যত জায়গা পাকা করে ফেলেছেন রিঙ্কু সিং। সদ্য জিম্বাবোয়ে সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে জিতেছে ভারত। এক ম্যাচেই ব্যাটিংয়ের দুর্দান্ত সুযোগ পেয়ে সেটি কাজেও লাগান। তাঁর প্লাস পয়েন্ট ফিল্ডিং। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফিল্ডিং করে যেতে পারেন। ক্লান্তি যেন তাঁকে ছুঁতে পারে না। বর্তমান টি-টোয়েন্টি দলে রিঙ্কু সিংই সেরা ফিল্ডার। জিম্বাবোয়েতে ভারতীয় দলের সেরা ফিল্ডারের মেডেলও জিতেছেন রিঙ্কু সিং। লাল-বলের ক্রিকেট বলতে ঘরোয়া ক্রিকেটেই খেলেছেন। প্রথম শ্রেনি অর্থাৎ লাল বলের ক্রিকেটে রিঙ্কু খেলেছেন ৪৭টি ম্যাচ। তাঁর ব্যাটিং গড় প্রায় ৫৫! যা তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতোই। সাতটি সেঞ্চুরি রয়েছে। সর্বাধিক স্কোর অপরাজিত ১৬৩।
সদ্য প্রাক্তন ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর। রবি শাস্ত্রীর সময় ব্যাটিং কোচ ছিলেন, দ্রাবিড়ের কোচিং টিমেও ছিলেন। দীর্ঘ সময় রিঙ্কু সিংকে সামনে থেকে দেখেছেন। বিক্রম রাঠোর মনে করছেন, টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্য প্রস্তুত রিঙ্কু সিং। সামনেই শ্রীলঙ্কা সফর। সেখানে সাদা বলের সিরিজ খেলবে ভারত। এরপর ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটো টেস্ট রয়েছে। তবে আসল লড়াই নভেম্বর থেকে। অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে ভারতীয় ক্রিকেট দল। সিরিজে রয়েছে পাঁচটি টেস্ট। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রিঙ্কুকে সুযোগ দিয়ে দেখে নেওয়া হতেই পারে।
বিক্রম রাঠোর বলছেন, ‘ওকে যখন নেটে ব্যাট করতে দেখি, এমন কোনও টেকনিক্যাল খুঁত খুঁজে পাইনি, যাতে মনে হতে পারে, ও টেস্টে সাফল্য পাবে না। এটা বুঝি, ও নিজেকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিনিশার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তবে ওর প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে ব্যাটিং গড় ৫০-র উপর! ওর সঙ্গে একটা যেন আশীর্বাদ রয়েছে। ও খুবই ঠান্ডা মাথার। সব দিক বিবেচনা করেই বলছি, ওকে যদি টেস্টেও সুযোগ দেওয়া হয়, নিজেকে মেলে ধরতে পারবে।’
ভারতীয় দলে বিক্রম রাঠোরের পরামর্শেই শুভমন গিল ও যশস্বী জয়সওয়ালের মতো দুই তরুণ ক্রিকেটারকে টেস্টে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা সাফল্য পেয়েছেন। রিঙ্কুর মধ্যেও সমস্ত রসদ মজুদ রয়েছে বলেই বিশ্বাস বিক্রম রাঠোরের। ভারতীয় দলের নতুন হেড কোচ গৌতম গম্ভীরও বিশ্বাস করেন, তিন ফরম্যাটেই খেলা উচিত। রিঙ্কু দেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টির পাশাপাশি, দুটি ওয়ান ডে ম্যাচও খেলেছেন। হতেই পারে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্টেও সুযোগ পেলেন!
প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট বলতে শুধু যে রঞ্জি ট্রফি খেলেছেন তা নয়। ভারত এ দলের হয়েও খেলেছেন রিঙ্কু সিং। দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজের সময় রিঙ্কুকে টেস্ট টিমের সঙ্গে রাখা হয়েছিল। তাঁকে পরিবর্ত ফিল্ডার হিসেবেও দেখা যায়। এ বার কি সাদা জার্সিতেও দেখা যাবে রিঙ্কু সিংকে?