বাংলা ও বাঙালির আইকন। ভারতীয় ক্রিকেটে গর্বের নাম সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। সৌরভের টিম ইন্ডিয়া অনেক অসাধ্য সাধন করেছে। খেলা ছাড়ার এত্তগুলো বছর পরও তাঁকে নিয়ে আবেগ একবিন্দু কমেনি। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় শুধু ক্রিকেট কিংবা ক্রিকেটারদের মধ্য়েই সীমাবদ্ধ নন। বিভিন্ন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, অন্য়ান্য ক্ষেত্রের সফল ব্যক্তি, সাধারণ জনতা সকলের কাছেই প্রিয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তেমনই নজর কাড়ে তাঁর রুচিবোধও। সেটা পোশাকের ক্ষেত্রেই হোক আর বাড়ি। বেহালায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি কোনও দর্শনীয় স্থানের চেয়ে কম নয়। বলিউড তারকা হোক বা অন্য কোনও ব্যক্তিত্ব। এই বাড়িতে পা রেখেছেন অনেকেই। তারিফও করেছেন। আমির খানের সেই ঘটনাও মনে আছে নিশ্চয়ই! একটি সিনেমার প্রচারে এমন মেক আপ করে এসেছিলেন সৌরভের বাড়িতে প্রথমে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি আমির খানকে।
খেলা ছাড়লেও আদতে যে খেলা ছাড়া যায় না, এটা প্রত্য়েকেই জানেন। সৌরভও নানা ভাবে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতিও ছিলেন। বাংলা ক্রিকেট সংস্থার সচিব এবং সভাপতিও। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজি দিল্লি ক্যাপিটালসের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট। ছেলেবেলায় ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবলও খেলেছেন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের টিমের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন সৌরভ। এছাড়াও ক্রিকেট ধারাভাষ্য, টেলিভিশন সঞ্চালনার সঙ্গেও যুক্ত। সেই সৌরভের বাড়ি একটু ঘুরে দেখা যাক?
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো রয়েছে, যেখানে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, নিজেই তাঁর বাড়ি ঘুরে দেখাচ্ছেন। এটি একটি বিজ্ঞাপনের জন্য করা হয়েছিল। যদিও বেহালায় তাঁর বাসস্থানকে বাড়ি বললে যেন ভুল হয়। বরং প্রাসাদ বলাই ভালো। বাইরে থেকে মনে হতে পারে, সাদামাটা একটা বাড়ি। আদতে তা নয়। সৌরভ নিজেই বলছেন, ‘এখানে থাকি আমি আর আমার মন’। এই বাড়িতেই গচ্ছিত তাঁর ছেলেবেলা, কৈশোর-যৌবন সব। এর যত্নটাও যে সেভাবেই হবে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকে কি?
প্রধান দরজা দিয়ে ঢুকেই বিশাল বাগান। এই দরজা পেরিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলেই মানসিক ভাবে শান্তি পান সৌরভ। এরপর গাড়ি বারান্দা। কিছুটা এগলেই নিজের ঘর। তবে সবকিছুর মাঝে এটা জানাতে ভুলছেন না, বাড়িটা বাড়ি তখনই হয়ে ওঠে, যখন সেখানে প্রিয়জনরা থাকেন। সৌরভের বাড়িতে একটি বসার ঘর রয়েছে। মনে হতেই পারে, এ আর নতুন কী! অনেকের বাড়িতেই থাকে। বিশেষত্ব এটাই, এই ঘরে অনেক স্মৃতি রয়েছে। যেখানে সকলে মিলে একসঙ্গে বসে কথা বলেন। অনেক মুহূর্ত তৈরি হয়। দেওয়ালে বেশ কিছু সুন্দর মুহূর্তের ছবি। রয়েছে টেলিভিশনও। ম্যাচ থাকলে এবং সে সময় বাড়তি থাকলে এখানেই বসেই টিভির পর্দায় চোখ রাখেন সৌরভ।
বাড়ির আরও বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখান সৌরভ। প্রতিটি জায়গায় স্মৃতি। ছেলেবেলায় যেখানে ক্রিকেট পিচ ছিল, সেই জায়গাটাও দেখান। সেখান থেকেই ক্রিকেটে এগিয়ে যাওয়া। ডাইনিং টেবিলের কাছে আসতেই মায়ের একটা কথা বলতে ভোলেননি। মা পছন্দ করেন খাবার বেড়ে দিতে। সৌরভ যতই মাকে বোঝান, নিজে নিয়ে নেবেন, তাতে কাজ হয়নি। শুধু সৌরভকেই নয়, অনেক সময়ই বাড়িতে এসেছেন তাঁর বন্ধু, সতীর্থরা। রাহুল দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ, সচিনকেও খাবার বেড়ে দিয়েছেন। সৌরভের দিন শুরু হয় বাড়ির যে অংশে, সেটিও দেখান। চায়ে চুমুক দিয়ে খবরের কাগজে চোখ বোলানো। রয়েছে একটি ট্রফি রুমও। সেখানে সৌরভের নানা ট্রফি এবং ক্রিকেটার সৌরভের বিভিন্ন বিশেষ মুহূর্তের ছবিও রয়েছে।