ফ্রান্সের একাধিক ট্রেন লাইনে হানা, উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টা আগে স্তব্ধ প্যারিস অলিম্পিক


Paris Olympics 2024: ফ্রান্সের একাধিক ট্রেন লাইনে হানা, উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টা আগে স্তব্ধ প্যারিস অলিম্পিকImage Credit source: AFP, X

কয়েক ঘণ্টা পর অলিম্পিকের (Paris Olympics 2024) উদ্বোধন। শ্যেন নদীর ৬ কিলোমিটার জুড়ে অভিনব ওপেনিং সেরেমনি অপেক্ষা করে রয়েছে সারা বিশ্বের জন্য। এই প্রথম স্টেডিয়ামের বাইরে বেরিয়ে উদ্বোধন হচ্ছে অলিম্পিকের। যা নিয়ে তুমুল আগ্রহ রয়েছে বিশ্ববাসীর। কয়েক ঘণ্টা আগে এই উদ্বোধন নিয়েই উঠে গিয়েছে প্রশ্ন। যে ঐতিহ্য, গরিমা তুলে ধরার কথা, ফ্রান্স কি আদৌ পারবে? কয়েক ঘণ্টা আগে পুরো ফ্রান্সের ট্রেন পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। প্যারিস এবং আরও কাছে-পিঠের আরও ২০টি শহরে অলিম্পিকের নানা ইভেন্ট হওয়ার কথা। শুটিং, সেলিংয়ের মতো ইভেন্ট প্যারিস থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে আয়োজন করা হয়েছে। অলিম্পিক সূচারু আয়োজনের জন্য নির্ভর করা হয়েছে ফ্রান্সের ট্রেন সিস্টেমের উপর। তাই যদি স্তব্ধ হয়ে যায়, তা হলে অলিম্পিকে প্রভাব নিশ্চিত ভাবে পড়বে। সেই আশঙ্কায় একা ফ্রান্স নয়, সারা বিশ্ব।

ভারতীয় সময় অনুযায়ী রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়ার কথা উদ্বোধন। শহরের বাইরের বিভিন্ন ভেনুতে যে সকল অ্যাথলিটরা রয়েছেন, তাঁরা একদিনের জন্য ট্রেনিং মুলতুবি রেখে সকলেই প্যারিসমুখী। মার্সেই থেকে প্যারিস আসছেন ভারতীয় টিমের দুই সেলর। নেত্রা কুমানন ও বিষ্ণু সর্বানন। তাঁরা সময় মতো প্যারিসে এসে পৌঁছতে পারবেন কিনা, কেউ জানে না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই অ্যাথলিট ট্রেনে আটকে রয়েছেন। এ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন।

বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ফ্রান্সের ট্রেন পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, বেশ কিছু ট্রেন লাইনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুস্কৃতিরা। এমনিতে ফ্রান্সের রাজনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো না। দেশে সদ্য সাধারণ নির্বাচন হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অলিম্পিক যখন সামনে, তখন নির্বাচনের দায় ফ্রান্স কেন নিল? এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিক্ষুব্ধ কিছু দল এই ঘটনায় জড়িয়ে আছে কিনা, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই জটিল, বিশ্বের সামনে মুখ পুড়েছে ফরাসি সরকারের। ইস্টার্ন, নর্দান, আটলান্টিক লাইন ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ইংলিশ চ্যানেল লাইন, যা আসলে লন্ডন-বেলজিয়াম রুট, তা-ও কার্যত থেমে গিয়েছে। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড-সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েক লাখ দর্শকের আজ প্যারিসে ঢোকার কথা। তাঁরা কী করবেন, বুঝতেই পারছেন না।

ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী অ্যামিলি কাস্তেরা বলেছেন, ‘এই ঘটনায় যারা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করা হবে। দেশে যখন অলিম্পিক, তখন এমন ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে, তাদের দেশ বিরোধী বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি যত দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, সেই চেষ্টা আমরা চালাচ্ছি। অলিম্পিক দেখতে যাঁরা আসছেন, যে অ্যাথলিটরা অংশগ্রহণ করছেন, তাঁদের যাতে কোনও রকম অসুবিধে না হয়, সেই কাজ আমরা শুরু করে দিয়েছি।’

অ্যামিলি কাস্তেরা যতই আশার কথা শোনান, পরিস্থিতি কিন্তু নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অলিম্পিকের উদ্বোধন যে কোনও দেশের ঐতিহ্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার মঞ্চ। যে শ্যেন নদীকে ঘিরে উদ্বোধনী মঞ্চ সাজানো হয়েছে, সেই নদীতেই না ফরাসি অতীত ও বর্তমান ডুবে যায়!

Leave a Reply