ভিডিয়ো: রিঙ্কু ‘সিং ইজ কিং’, সূর্যকুমার যাদব ‘কমপ্লিট’ ক্যাপ্টেন!


কেউ ভেবেছিল এমন হতে পারে! শ্রীলঙ্কার হাতে ম্যাচ। বোর্ডে মাত্র ১৩৮ রানের টার্গেট। দুটো ৫০ রানের পার্টনারশিপ। শেষ ৩০ বলে ৩০ রান প্রয়োজন। সেখান থেকে কোনও টিম ম্যাচ হারতে পারে? পারে। যদি প্রতিপক্ষ টিম হয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। আর কোচ গৌতম গম্ভীর, ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। যাঁরা সারপ্রাইজ দিতে ভালোবাসেন। শ্রীলঙ্কা টিমের জন্যও এমন সারপ্রাইজ ছিল যে, ম্যাচ শেষে তাদের ক্য়াপ্টেন কী বলবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না! কোনওরকমে সব প্রশ্নেরই উত্তর দিতে হবে তাই দিলেন। ম্যাচ সুপার ওভারে যেতে পারে, সেটাই বা ক’জন ভেবেছিলেন! শেষ ২ ওভারে বাকি মাত্র ৯ রান! হাতে ৬ উইকেট। ক্রিজে সেট ব্যাটার কুশল পেরেরা। সেখান থেকে কীভাবে ম্যাচ ‘ঘোরালেন’ ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব?

অন্য কোনও ক্যাপ্টেন হলে হয়তো বল তুলে দিতেন টিমের প্রধান পেসার মহম্মদ সিরাজের হাতেই। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৯তম ওভার। কারণ, ক্লোজ ম্যাচের ক্ষেত্রে এই ওভারেই রং-বদল হয়ে যায়। পুরোপুরি সিলেবাসের বাইরে গিয়ে রিঙ্কু সিংয়ের হাতে বল তুলে দিলেন সূর্যকুমার যাদব। প্রথম ম্যাচে স্লগ ওভারে এ ভাবেই বোলিংয়ে এনেছিলেন রিয়ান পরাগকে। সেখান থেকেই ম্যাচ ঘোরে। দ্বিতীয় ম্যাচে অক্ষর প্যাটেল। তবে ১৯তম ওভারে রিঙ্কু সিং! আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যিনি প্রথম বোলিং করবেন! খেলাটাকে উপভোগ করা প্রয়োজন। সেটাই করলেন রিঙ্কু সিং। ব্যাটিংয়ে ভরসা দিতে পারেননি। বোলিংয়েই না হয়!

রিঙ্কু সিং যে নিয়মিত বোলিং প্র্যাক্টিস করেন, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মাকে দেখা গিয়েছিল রিঙ্কু সিংয়ের অফস্পিনে প্র্যাক্টিস করছেন। রিঙ্কুও সেই প্র্যাক্টিসটাই যেন কাজে লাগালেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট! এইটুকু সারপ্রাইজে শ্রীলঙ্কা শিবিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা দ্বিগুন হল শেষ ওভারে।

শেষ ওভারে আক্রমণে নিজেই এলেন ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। ৬ বলে ৬ রান দরকার শ্রীলঙ্কার। হাতে চার উইকেট। স্কাইও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম বোলিং করলেন। ৫ রান দিয়ে ২ উইকেট। ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। আর সেখানে বল হাতে দায়িত্ব নেন ওয়াশিংটন সুন্দর। ভারতের জন্য টার্গেট ছিল মাত্র ৩ রান। স্কাই প্রথম ডেলিভারিতেই বাউন্ডারি মেরে ম্যাচ ফিনিশ করেন স্কাই। ব্যাটিং, বোলিং, সারপ্রাইজ-কমপ্লিট ক্যাপ্টেন সূর্য!

কোন ভাবনা থেকে শেষ ওভারে নিজে বোলিংয়ে এলেন সূর্য? ম্যাচ এবং সিরিজ সেরা সূর্য ম্যাচ শেষে বলেন, ‘আমার মনে শেষ ওভারের চেয়েও প্রশংসনীয় আমাদের মিডল অর্ডার ব্যাটিং। আমরা ৩০ রানে ৪ উইকেট হারাই, ৪৮ রানে পাঁচ। সেখান থেকে দুর্দান্ত জুটি। এই পিচে ১৪০ রান পার স্কোর মনে হয়েছিল। সতীর্থদের বলেছিলাম, এরকম পরিস্থিতি আগেও দেখেছি। মন দিয়ে খেলো। এখান থেকেও জেতা সম্ভব। ওদের আত্মবিশ্বাস এবং স্কিল, দুটোর উপরই আমার ভরসা ছিল। এতেই আমার কাজ সহজ হয়ে গিয়েছিল। আমি ক্যাপ্টেন হতে চাই না, আমার লক্ষ্য লিডার হওয়া।’



Leave a Reply