১৪০ কোটি মানুষের স্বপ্নভঙ্গ কখন হয়? মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন যখন পাহাড় হয়ে যায়! ১৪০ কোটি মানুষের স্বপ্নের ওজন কত? তাও বোধহয় ১১৪ কেজির পাহাড়। সকালের মতো রাতেও আর একবার স্বপ্নভঙ্গ ভারতের। অবিশ্বাস, টেনশন, উদ্বেগে কেটেছে দিনভর। বিস্ময় বদলেছে আক্ষেপে। সোনা না রুপো— স্বপ্ন হঠাৎ নিভে গিয়েছিল বিনেশ ফোগাটের। রাতে আবার ফিরে সেই হতাশা। এ বার আক্ষেপের নাম মীরাবাঈ চানু।
২ বছর ধরে ২০০ কেজির বেশি ওজন তোলেননি। চোটে বারবার বিপর্যস্ত হতে হয়েছে। বেশ কিছু টুর্নামেন্ট থেকেও সরে দাঁড়িয়েছিলেন। সংশয় ছিল তাঁকে নিয়ে। না। অলিম্পিকের জন্য নিজেকে তুলে রেখেছিলেন মীরাবাঈ চানু। সব মিলিয়ে ১৯৯ কেজিতেই আটকে গেলে ভারতের মেয়ে। শেষ লিফটে ১১৪ কেজি তুলতে চেয়েছিলেন ক্লিন অ্যান্ড জার্কে। কিন্তু পারলেন না। এ বারও জার্কে আটকে যান। তখনই বুঝে গিয়েছিলেন এ বার আর পদকের হাসি থাকবে না। কান্নায় তখনই ভেঙে পড়েন চানু। ৪৯ কেজি ভারোত্তোলনে চতুর্থ হলেন ভারতের মেয়ে।
স্ন্যাচে কিছুটা দুর্বল। কিন্তু ৮৫ কেজি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই তুলেছিলেন মণিপুরের মেয়ে। পরের টার্গেট রেখেছিলেন ৮৮ কেজি। তবে প্রথম লিফট মিস করেন। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় তুলে ফেললেন অবলীলায়। গতবার টোকিও গেমসে তুলেছিলেন ৮৭ কেজি। এ বার সেই ওজনকেও টপকে গেলেন। স্ন্যাচের পর তিনে ছিলেন ভারতের মেয়ে। ৯৩ কেজি তুলে এক নম্বর দখল করে ফেলেছিলেন রোমানিয়ার ভ্যালেন্সিয়া কেম্বাই। জিহুই হাও, গতবারের চ্যাম্পিয়ন স্ন্যাচে ৮৯ কেজি তুলেছিলেন।
টোকিওতে ১১৫ কেজি তুলেছিলেন ক্লিন অ্যান্ড জার্কে। কিন্তু এ বার ১১১ কেজির প্রথম লিফটটাই মিস করেন। ক্লিন ঠিক মতো ক্লিয়ার করলেও জার্কে পারেননি। দ্বিতীয় লিফটে কোনও ভুল করলেন না। স্ন্যাচ, ক্লিন ও জার্ক মিলিয়ে ১৯৯ কেজি তুলে তিনে ঢুকে পড়েন। কিন্তু ভ্যালেন্সিয়া ২০৫ কেজি তুলে এক নম্বরে ছিলেন। মীরা শেষ লিফটটা ১১৪ কেজি রেখেছিলেন। তা তুলতে পারলে ব্রোঞ্জটুকু নিয়ে ফিরতে পারতেন। তা হল না।
৪৯ কেজি বিভাগে মীরাবাঈ চানু নিরাশ করলেও সোনা নিয়ে গেলেন সেই চিনের জিহুই হাও-ই। সব মিলিয়ে ২০৬ কেজি তুলে। ১ কেজি কম অর্থাৎ ২০৫ কেজি তুলে রুপো রোমানিয়ার ভ্যালেন্সিয়ার। ব্রোঞ্জ থাইল্যান্ডের সুরোদচানা খামবাও, ২০০ কেজি তুলে। এ বার ভারতের ৫ অ্যাথলিট চতুর্থ হয়েছেন। সেই তালিকায় বাড়ল আর এক নাম— মীরাবাঈ চানু।