অর্পণ দাস: গত আইপিএলের অন্যতম আবিষ্কার কেকেআরের অঙ্গকৃষ রঘুবংশী। কে ভুলতে পারে, দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে তাঁর ২৭ বলে ৫৪ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস? যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। এবার তাঁকে রিটেন না করলেও শেষ পর্যন্ত নিলাম থেকে তুলে নিয়েছে কেকেআর। ৩৫ লক্ষ বেস প্রাইস থেকে ২০ বছর বয়সি তারকার দাম উঠেছে ৩ কোটি টাকা। মুম্বইয়ের ব্যাটার এই মুহূর্তে ব্যস্ত সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি খেলতে। তার মধ্যেই অঙ্গকৃষ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে জানালেন নাইট জার্সিতে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা।
প্রশ্ন: ফের নাইট রাইডার্সের জার্সিতে দেখা যাবে আপনাকে। যাকে ঘরওয়াপসিও বলা যেতে পারে। প্রথমেই বলুন নাইট শিবিরে ফিরে কেমন লাগছে?
অঙ্গকৃষ: আমি খুবই খুশি। গতবার নাইট রাইডার্সে খেলার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। নাইট সমর্থকদের কথা আলাদা করে বলতে হয়। ঘরে ফিরতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।
প্রশ্ন: গতবার যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই অসাধারণ খেলেছেন। যে কারণে এবার ৩৫ লক্ষ থেকে একেবারে ৩ কোটিতে দাম উঠল। এই সফরটা কেমন ছিল? সাফল্যের পিছনের গল্পটা যদি বলেন?
অঙ্গকৃষ: প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে এই জায়গায় আসার জন্য। সত্যি কথা বলতে, কিছুটা ভাগ্যের সাহায্যও পেয়েছি। তার বাইরে কেরিয়ারে সে অর্থে বড় কোনও বাধার মুখোমুখি হতে হয়নি। কিন্তু যখনই সুযোগ এসেছে, সেটাকে হাতছাড়া করিনি। এবারও সুযোগ পেলে নিজেকে উজাড় করে দেব।
প্রশ্ন: কেকেআরের স্কোয়াড তৈরি। ম্যানেজমেন্টের কারওর সঙ্গে কি কথা হয়েছে? কী মনে হয়, এবার কোন ভূমিকায় দেখা যেতে পারে আপনাকে?
অঙ্গকৃষ: না, এখনও কারওর সঙ্গে কথা হয়নি। আমি নিজের জন্য আলাদা করে কিছু ভাবিনি। দল আমাকে যে দায়িত্ব দেবে, সেটাই পালন করব। তবে সুযোগ পেলেই নিজের সেরাটা দেব।
প্রশ্ন: এখন তো সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ব্যস্ত। নিশ্চয়ই আইপিএল নিলামেও চোখ ছিল? নাইটদের হয়ে নামার প্রস্তুতি কি শুরু হয়ে গেল?
অঙ্গকৃষ: না, এখনই আইপিএল নিয়ে ভাবছি না। আপাতত মুম্বইয়ের হয়ে মন দিয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি খেলতে চাই। দলকে ট্রফি জেতাতে চাই। যখন আইপিএলের সময় আসবে, তখন ওটার প্রস্তুতি নেব।
প্রশ্ন: এর আগে ভারতকে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। আইপিএলেও এত ভালো পারফরম্যান্স। পরের লক্ষ্য কি ভেবে রেখেছেন?
অঙ্গকৃষ: হ্যাঁ, অবশ্যই। দেশের হয়ে খেলতে চাই। সেটা তো যে কোনও ক্রিকেটারের স্বপ্ন। তবে সেটা ভেবে এখন থেকেই বাড়তি চাপ নিতে চাই না। আমার কাজ হবে, সামনে যে ম্যাচ আসবে, সেটাতে ভালো পারফর্ম করা। জানি যে, লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। নিজের খেলার উন্নতি করতে হবে।
প্রশ্ন: চাপের কথা যখন উঠলই, তখন প্রশ্ন, কোনও চাপ অনুভব করছেন? বা ভেবেছিলেন, এতটা মূল্য পেতে পারেন?
অঙ্গকৃষ: না, কোনও বাড়তি চাপ নিচ্ছি না। শুধু খুশি যে, ফের কেকেআরের হয়ে খেলার সুযোগ পাব। আর সত্যি কথা বলতে, নিলামে কত দাম উঠবে, সেটা নিয়েও আগে থেকে কিছু ভাবিনি।
প্রশ্ন: গত মরশুমে দলে গৌতম গম্ভীর, অভিষেক নায়ার ছিলেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে খেলেছেন। এবার চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত থাকলেও মেন্টর হিসেবে ডোয়েন ব্র্যাভো এসেছেন। গম্ভীর-নায়ারদের কি মিস করবেন?
অঙ্গকৃষ: গতবার ওঁদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তাই এবার ওঁদের অভাব তো অনুভব করবই। তবে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত স্যর আছেন। ওঁর থেকে প্রচুর কিছু শেখার আছে। গতবার সেই সৌভাগ্য পেয়েছি। এবারও ওঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। নতুন মেন্টর ব্র্যাভোও আইপিএলের কিংবদন্তি। ওঁর থেকে যতটা পারব, শিখে নেওয়ার চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: গম্ভীর স্যরদের সঙ্গে কাটানো সময়ের অভিজ্ঞতা যদি ভাগ করে নেন?
অঙ্গকৃষ: গতবার নিজে হাতে অনুশীলন করে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। বিভিন্ন রকম পরিস্থিতি তৈরি করিয়ে, বা নানারকম পিচে প্র্যাক্টিস করিয়েছেন। আসলে কোন পদ্ধতিতে পরিশ্রম করতে হয়, সেটা ওঁর থেকেই বুঝেছি। আর গম্ভীর স্যরদের সঙ্গে কাটানো স্মৃতির গল্প বলতে গেলে তো প্রচুর সময় কেটে যাবে। নিজেও বুঝতে পারছি না কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব! আসল কথাটা হল, ওঁদের পরামর্শ আমার উন্নতিতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে।
প্রশ্ন: গতবারের চ্যাম্পিয়ন নাইট রাইডার্স। এবারও ফের ইডেন মাতাবেন। নাইট সমর্থকদের জন্য কোনও বিশেষ বার্তা?
অঙ্গকৃষ: কেকেআর ভক্তদের বলতে চাই, আই লাভ ইউ অল। করব, লড়ব, জিতব রে। জয় কেকেআর।