শুভায়ন চক্রবর্তী, ব্রিসবেন: রবিচন্দ্রন অশ্বিনের একটা ঘোষণা, বিশ্ব ক্রিকেটকে হতবাক করে দিয়ে গেল। প্রায় দশবছর আগে অস্ট্রেলিয়া সফরে হঠাৎ করে টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। আবারও এক অস্ট্রেলিয়া সফর। ভারতীয় ক্রিকেটের আরও এক নায়কের অবসর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তারকা অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ভারতীয় অফস্পিনারের এহেন সিদ্ধান্ত অবাক করেছে হরভজন সিংকে। তিনি ভাবতে পারেননি যে সিরিজের মাঝেই আচমকা এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেবেন অশ্বিন। অশ্বিনের অবসরের সিদ্ধান্ত শোনার পর হরভজন ব্রিসবেন- সাক্ষাৎকারে যা বললেন….
“অশ্বিনের ঘোষণা আমাকেও অবাক করেছে। আমার মনে হয় ওর পুরো সিরিজ খেলা উচিত ছিল। তবে সবার আলাদা চিন্তাভাবনা থাকে। ওর হয়তো মনে হয়েছে এটাই সঠিক সময়। দুর্দান্ত কেরিয়ার অশ্বিনের। বছরের পর বছর ধরে ভারতের হয়ে দুর্ধর্ষ পারফর্ম করেছে। প্রচুর ম্যাচ জিতিয়েছে। প্রচুর সিরিজ জিতিয়েছে। ওকে শুভেচ্ছা জানাই। আশা করছি পরবর্তী ইনিংসেও একইরকম সাফল্য পাবে অশ্বিন। ক্রিকেট নিয়ে প্রচণ্ড চিন্তাভাবনা করে ও। প্রত্যেক মুহূর্তকে বিশ্লেষণ করে। ক্রিকেটের খুব ভালো ছাত্র অশ্বিন। একজন ক্রিকেটারের কাছে অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন।”
“আমার মনে হয় অবসরের সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে আসেনি। নিশ্চয়ই বেশ কিছু দিন ধরে এটা নিয়ে ভেবেছে। ইদানিংকালে বিদেশে খেলা থাকলে অশ্বিন প্রথম এগারোয় খুব একটা সুযোগ পাচ্ছিল না। আমার মনে হয় সেটাই ওকে অবসর নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে। যখন একজন সেরা স্পিনার, যে দেশকে বছরের পর বছর সিরিজ জিতিয়েছে, সে যখন প্রথম এগারোয় সুযোগ পায় না, তখন অবসরের ভাবনা চলে আসা খুব স্বাভাবিক। এখানে আরও একটা কথা বলে রাখি। ২০২৫ পর্যন্ত দেশের মাঠে কোনও টেস্ট নেই ভারতের। স্পিন ডিপার্টমেন্টে আমরা ট্রানজিশন দেখতে পাচ্ছি। ওয়াশিংটন সুন্দরকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। পারথেও সেটা দেখেছি। অশ্বিনের হয়তো মনে হয়েছে ইংল্যান্ডেও ওয়াশিংটনকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে। বেশ কয়েক জনের থেকে আমি কথাগুলো শুনেছি। জানি না এর সত্যতা কতটা। তবে এটাও একটা কারণ হতে পারে।”
“যা-ই হোক, অশ্বিনের কেরিয়ারের দিকে তাকালে একটা কথা বলতে হবে-দুর্ধর্ষ। একজন বড় ক্রিকেটার যখন অবসর নেয়, তখন যে প্রশ্ন ঘুরে ফিরে চলে আসে, সেটা হল- ওর জায়গা কে পুরণ করবে? ভারতীয় ক্রিকেট প্রচুর কিংবদন্তির জন্ম দিয়েছে। সেই ট্র্যাডিশন চলবে। ভারতবর্ষে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। আমাদের ব্যাটিংয়ের দিকে যদি তাকান, শুভমান গিল, যশস্বী জয়সওয়ালরা রয়েছে। শচীন তেণ্ডুলকরের অবসরের পর বিরাট কোহলি চলে এসেছে। যখন বিরাট অবসর নেবে, তখন আবার জুনিয়র ক্রিকেটাররা চলে আসবে। ট্রানজিশন পর্বে আমরা নতুন প্রতিভা ঠিক পেয়ে যাব। আশা করছি, ওয়াশিংটন যদি পর্যাপ্ত সুযোগ পায়, তাহলে ও নিজেকে প্রমাণ করবে। নিজের বোলিংকে আরও উন্নত করবে। বিদেশের পরিবেশে কীভাবে বোলিং করত হবে, ভালো ব্যাটিং উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হবে, সে’সব শিখবে। আর ভারতীয় টিমের হয়ে লম্বা সময় খেলবে…।”