১০-১১’র ৫৫ রানের জুটি, নাটকীয় দিন শেষে ‘লেজে’ জড়িয়ে ভারত


কেউ ভাবেনি ম্যাচ এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়াতে পারে। অন্তত বিরাটের সঙ্গে যশস্বীর ভুল বোঝাবুঝি এবং চার ওভারে তিন উইকেট হারানোর পর তো নয়ই। ভারতকে ফলো অন করাবে কি না অস্ট্রেলিয়া, তখন আলোচনায় ছিল সেটিই। যদিও ওয়াশিংটন সুন্দর ও নীতীশ কুমার রেড্ডি জুটি ভারতে ম্যাচে ফেরায়। প্রথম ইনিংসে ১০৫ রানের লিড নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের পেস দাপটে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ঘণ্টায় চূড়ান্ত বিরক্তি। পঞ্চম দিন অবিশ্বাস্য কিছুর প্রত্যাশা। এখান থেকে তিনটি রেজাল্টই সম্ভব। যদিও ভারতের জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। বিরাটের ভাষায়, এক পারসেন্ট চান্সও অনেক! সেই অবস্থাতেই দাঁড়িয়ে ভারত।

যশস্বীর তিন ক্যাচ মিসের পর ভারতীয় শিবিরে চূড়ান্ত অস্বস্তি ছিল। মার্নাস লাবুশেন এবং প্যাট কামিন্স দুর্দান্ত জুটি গড়েন। তিনটি ক্যাচ মিসের মধ্যে লাবুশেন ও কামিন্সের ছিল। অবশেষে জুটি ভাঙার ‘চার্জ নেন’ DSP সিরাজ। লাবুশেনকে ক্লিন বোল্ড করেন তিনি। ৭০ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস। মার্নাস লাবুশেন ফিরতেই অজি শিবিরে অস্বস্তি। ভারতীয় শিবির যদিও পুরোপুরি স্বস্তিতে ছিল না। স্কোরবোর্ড সচল রেখেছিলেন কামিন্স।

প্যাট কামিন্সের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন মিচেল স্টার্ক। তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা নিয়ে সন্দেহের জায়গা নেই। কিন্তু ভারতের মতোই অজি শিবিরে টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়াল রানআউট! প্যাট কামিন্সের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি। দ্বিতীয় রান নিতে দৌড়েছিলেন স্টার্ক। মানা করে দেন ক্যাপ্টেন। দীর্ঘদেয়ী স্টার্কের পক্ষে টার্ন নিয়ে ফেরা চাপের হয়ে যায়। ঋষভ পন্থের দিকে থ্রো এলেও উল্টোদিকে মারতে হত। বল ধরে বুলেট থ্রোয়ে উল্টোদিকে উইকেট ভেঙে দেন ঋষভ পন্থ। রবীন্দ্র জাডেজা প্যাট কামিন্সকে ফেরান। এক্সট্রা বাউন্স, স্লিপে ক্যাপ্টেনের ক্যাচ নেন ক্যাপ্টেন রোহিত।

এই খবরটিও পড়ুন

শেষ উইকেট নিতেও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হল ভারতীয় দলকে। নাথান লিয়ঁর একটি কট অ্যান্ড বোলের চান্স এলেও সিরাজের হাত ফসকে বেরিয়ে যায় বল। নাথান লিয়ঁ এবং স্কট বোল্যান্ড টুকটুক করে রান যোগ করতে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে প্রত্যেকটা রান সোনার মতোই দামি ছিল। ভারতীয় ফিল্ডাররাও যেন আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিল। প্রচুর মিস হয়। বুমরাকে আক্রমণে আনতে বাধ্য হন রোহিত শর্মা। তাতেও কোনও লাভ হয়নি। নীতীশের একটি ডিরেক্ট থ্রো অল্পের জন্য মিস।

জাডেজার সঙ্গে ওয়াশিংটন সুন্দরকে আনেন রোহিত। দু-দিক থেকেই স্পিন। লিডে অনেক আগেই ৩০০ পেরিয়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়াও ইনিংস ডিক্লেয়ারের ঝুঁকি নিতে নারাজ। যতটা সম্ভব ক্রিজে কাটানো এবং রান যোগ করায় নজর দেন লিয়ঁ ও বোল্যান্ড। সাফল্যও আসে। তখনও প্রায় ১৫ মিনিট বাকি। আকাশ দীপকে আনেন। প্রথম ডেলিভারিতেই লেগ বিফোরের সম্ভাবনা। অনফিল্ড আম্পায়ার দেননি। শেষ রিভিউটা নিয়েই নেন রোহিত। যদিও উইকেট মিসিং। ভারতের রিভিউও শেষ।

দ্বিতীয় নতুন বলের সুযোগ এলে ওয়েট করেন রোহিত। পুরনো বলে রিভার্স সুইং হচ্ছিল আকাশ দীপের। যদিও একটি ডেলিভারির পরই নতুন বল নেওয়া হয়। একশো বলের পার্টনারশিপ পেরিয়ে যায়। যা ভারতীয় শিবিরে প্রচণ্ড বিরক্তির কারণ। প্রত্যাশিত ভাবেই বুমরাকে আনা হয় উল্টোদিকে। কিন্তু বিরল ফুলটস ডেলিভারি বুমরার। বাউন্ডারি মারেন লিয়ঁ। অবশেষে লোকেশ রাহুলের অনবদ্য ক্যাচ! কিন্তু নাটকের তখনও বাকি। ৩ সেকেন্ডের মধ্যেই ফের নো বল ডাকেন আম্পায়ার। বুমরার ফাইফার এবং অজি ইনিংসের ইতি অপেক্ষাতেই থেকে যায়। উল্টে ৫০ রানের পার্টনারশিপ পেরিয়ে যায়। ১৪ রান আসে এই ওভারে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৮-৯ স্কোরে দিন শেষ করল অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে ৩৩৩ রানে এগিয়ে।

Leave a Reply