ফোনটা সদ্য রিসিভ করেছেন। কিন্তু কথা বলার সুযোগই পাচ্ছেন না। এমনটাই তো হওয়ার কথা। বাংলাকে ভারতসেরা করেছেন। তাঁকে ঘিরে একঝাঁক ফুটবল প্রেমী। টিম মেম্বার, কর্মকর্তা, হায়দরাবাদ স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রত্য়েকেই চাইছেন শুভেচ্ছা জানাতে। সেটা যদিও সম্ভব ছিল না। হয়তো সুযোগ পেলে তাও করতেন। কিন্তু যারা টুর্নামেন্টের সঙ্গে জড়িত, নানা কর্মকর্তা, প্রত্যেকেই শুভেচ্ছা জানিয়ে যাচ্ছেন। স্পট লাইটে বাংলার কোচ। সঞ্জয় সেন ফোন রিসিভ করে কিছু একটা বলার আগে, আরও একজনকে ধন্যাবাদ জানিয়েই ফোনে মন দিলেন। শুরুটাই হল, ‘এই মাত্র ফোনটা হাতে পেলাম…।’
কলকাতা ময়দানের তথাকথিত ছোট-বড় ক্লাব, ভারতের বয়সভিত্তিক টিম, আই লিগ টিমকেও কোচিং করিয়েছেন। দীর্ঘ কোচিং কেরিয়ারে সাফল্যও পেয়েছেন। সন্তোষ ট্রফির ইতিহাসে অন্যতম সফল দল বাংলা। কিন্তু গত কয়েক বছর ট্রফি আসছিল না। প্রথম বার বাংলার কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই চ্যাম্পিয়ন করলেন সঞ্জয় সেন। ফাইনালের লড়াইটা সহজ ছিল না। কোনও লড়াই সহজ হয় না। প্লেয়ারদের জন্য বিশেষ কী বলেছিলেন? এই সাফল্যের রহস্য কী?
টিভিনাইন বাংলাকে সঞ্জয় সেন বলেন, ‘দুর্দান্ত অনুভূতি। আমার কাছে এটা একটা চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব ছিল। এবং এই সাফল্যের পুরোপুরি কৃতিত্ব ছেলেদের।’ ফাইনালে কেরলের মতো শক্তিশালী দল। বছর তিনেক আগে ফাইনালে কেরলের কাছে টাইব্রেকারে ট্রফি হাতছাড়া হয়েছিল। বদলা নিয়েই চ্যাম্পিয়ন বাংলা। ফাইনালের আগে ছেলেদের কী বলেছিলেন কোচ?
এই খবরটিও পড়ুন
সঞ্জয় সেনের কথায়, ‘ধৈর্য। বোর্ডে একটা কথাই লিখে দিয়েছিলাম। ধৈর্য রাখতে হবে। প্রতিপক্ষ আক্রমণ করবে। তাতে ঘাবড়াবে না। সুযোগ আসবেই। সেটা ২ মিনিটেও আসতে পারে আবার ৯০ মিনিটেও। আমরা ওড়িশার বিরুদ্ধে ৯১ মিনিটে গোল করেছি, সার্ভিসেসের বিরুদ্ধেও ৯০ মিনিটের মতো সময়ে, আজকেও কার্যত একই সময়ে গোল করেছি। ছেলেরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। ওরা লক্ষ্যে স্থির ছিল। সমস্ত কৃতিত্ব ছেলেদের।’
সবাই বলছে, এক্স ফ্যাক্টর সঞ্জয় সেন। আবার অনেকেই মনে করেন, বাংলায় প্রতিভার অভাব। তা শুনে উত্তর দিতে মুহূর্তও নিলেন না। সঞ্জয় সেনের কথায়, ‘বাংলায় প্রতিভার অভাব! এটা যাঁরা বলছে, কারণটা তাঁরাই বলতে পারবে। আমি মনে করি না, বাংলায় প্রতিভার অভাব রয়েছে। আর এক্স ফ্যাক্টর প্লেয়াররাই। ট্যালেন্ট নেই, এটা পুরোপুরি ভুল। ট্যালেন্ট খুঁজতে হয়, জানতে হয়। এর জন্য পরিশ্রম করতে হয়। ট্যালেন্ট এমনই হয় না।’
সঞ্জয় সেনের কোচিং কেরিয়ারে নানা সাফল্যের মাঝে আরও একটা মুকুট যোগ হল। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার ৩৩ তম ট্রফিটা এল তাঁর কোচিংয়েই। অবশ্য প্লেয়ারদেরই যাবতীয় কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচ। তিনি মাঠের বাইরে থেকে অনেক পরামর্শই দিতে পারেন। লড়াইটা যে প্লেয়ারদেরই করতে হয়!