মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: আর্থিকভাবে পিছিয়ে পরিবার। ছোটবেলা থেকেই বহু সুযোগ থেকে হাতছাড়া হতে হয়েছে। কিন্তু এখন তিনিই এলাকার চোখের মণি। সাধারণ নিম্ন মধ্যবিত্ত ওই পরিবারে এখন ছোটছেলেকে নিয়ে অসীম আনন্দ। হাওড়ার বাগনানের গুনানন্দপুরের বাসিন্দা বছর ২৯-এর সৌরভ সামন্ত বাংলার ফুটবল দলে গোলরক্ষক হিসেবে খেলেন। এবার সন্তোষ ট্রফি জিতে বাংলা দল ফিরেছে। সৌরভকে নিয়ে আশা অনেকের। আর সৌরভ আশা করছেন একটা চাকরির।
এ যেন গলি থেকে রাজপথে উঠে আসার গল্প। খেপ খেলা দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁর ফুটবল জীবন। ম্যাচের পর ম্যাচ তেকাঠির সামনে গুরুদায়িত্ব সামাল দিতে থাকেন তিনি। সেখান থেকেই অন্যান্যদের নজরে আসেন বাগনানের বাসিন্দা সৌরভ সামন্ত। এরপর বাংলা দলের গোলরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পান। সেখানে এবারের সন্তোষ ট্রফিতে সেই গুরুদায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ সফল এই তারকা। ১১টি ম্যাচের মধ্যে নটিতে তিনি খেলেছিলেন। কোনও খেলাতেই তাঁকে পরাস্থ করে বিপক্ষ জালে বল গড়াতে পারেনি।
সেই সৌরভ আরও ভালো খেলতে চান। পাশাপাশি একটি চাকরিও চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুটবলারদের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই কথাতেই বুক বাঁধছেন সৌরভ। তাঁর আশা হয়তো পরিবারের আর্থিক সমস্যা মিটবে। অতি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা তপন সামন্ত ভিন রাজ্যে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। দাদা কৌশিক সামন্ত এখন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী, মা গৃহবধূ।
খেপ খেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা পেতেন সৌরভ। সেই টাকা দিয়ে সংসারও চলেছে বিভিন্ন সময়ে। সেসময় তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় পাঁশকুড়ার ফুটবলে উৎসাহী যুবক সাবিরের সঙ্গে। তাঁর মাধ্যমেই লকাতার ইউনাইটেড স্পোর্টিংয়ে খেলার সুযোগ পান সৌরভ। সেখানে তিনি প্রায় ছয় বছর খেলেন। এরপর তিনি সুযোগ পান সন্তোষ ট্রফির জন্য বাংলা দলে। তিনি পাড়ি দেন হায়দরাবাদে। সৌরভ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীই এখন ভরসা। তিনি চাকরি দিলে খুবই উপকৃত হব। পাশাপাশি মন দিয়ে খেলতে পারব।”
এলাকার তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানিয়েছেন, বিধায়ক অরুনাভ সেন বিভিন্ন সময় ওই পরিবারের পাশে থেকেছেন। আগামী দিনেও তিনি সৌরভের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। দলগতভাবেও তাঁরা সৌরভের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ।