সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঠে নেমে খেলা হোক বা কোচিং- দুই ভূমিকাতেই ফুটবলকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর হাত ধরেই উঠে এসেছেন সুনীল ছেত্রীর মতো কিংবদন্তি। এখন বয়স থাবা বসিয়েছে তাঁর শরীরে। কিন্তু মনের জোর এখনও কাবু হয়নি তাঁর- সুব্রত ভট্টাচার্যের। তাই তো সকলের অগোচরে গড়ে তুলছেন কিশোর ফুটবলারদের, আগামী দিনে যারা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে বাংলা ফুটবলের ব্যাটন। প্রত্যেক সপ্তাহে শ্যামনগরে গিয়ে নিজের অ্যাকাডেমিতে ফুটবলের পাঠ দিচ্ছেন কিশোরদের।
মোহনবাগানের ঘরের ছেলে সুব্রত এখন সত্তর পেরনো বৃদ্ধ। কিন্তু ফুটবলের টানে প্রত্যেক রবিবার চলে যান নিজের ভিটে শ্যামনগরে। সেখানেই সাহেব বাগান যুবকবৃন্দের মাঠে রয়েছে ‘সুব্রত ভট্টাচার্য ফুটবল অ্যাকাডেমি।’ প্রায় দুঘণ্টা ধরে ফুটবল শেখান কচিকাঁচাদের। এজন্য টাকা নেওয়া তো দূর, নিজেই টাকা খরচ করেন কিশোর ফুটবলারদের খাবার, টিফিন কিনে দিতে। একসময়ে মাঠ কাঁপানো ফুটবলারের মতে, ‘এখান থেকে আমি ফুটবলার তৈরি করতে পারব কি না জানি না, কিন্তু আমার জন্মশহরে আমি ফুটবল-কালচারটা ধরে রাখতে চাই। তাই আমার এই প্রচেষ্টা।’
তাই গত কয়েকবছর ধরে বিশেষ রুটিন বানিয়ে ফেলেছেন সুব্রত। সকাল সাড়ে ছ’টায় নিজের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। গল্ফ গ্রিন থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে শ্যামনগরে পৌঁছে গিয়ে ফুটবল শেখান কিশোরদের। সাহেব বাগানে নিজের ভিটে বা অ্যাকাডেমির প্রশাসক নবীন সাহার বাড়িতে সামান্য খাওয়াদাওয়া সেরে আবার ফিরে আসেন কলকাতায়। নিজেই গাড়ি চালিয়ে যাতায়াত করেন প্রতি রবিবার। এছাড়াও সারা সপ্তাহ ধরে এই অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেন দুই কোচ শুকদেব ধর ও তিমির বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাফল্যের মুখও দেখেছে শ্যামনগরের সুব্রত ভট্টাচার্য ফুটবল অ্যাকাডেমি। সেখানকার প্রশাসক নবীন জানান, অ্যাকাডেমিতে এখন অন্তত ৫০ জন অনূর্ধ্ব ১৪ ফুটবলার রয়েছে। যথেষ্ট ভালো প্র্যাক্টিস করে তারা। অ্যাডামাস, ভবানীপুর, ইউনাইটেড, ইস্টবেঙ্গলের মতো দলগুলির জুনিয়র টিমে ট্রায়াল দিয়ে নির্বাচিত হয়েছে এই অ্যাকাডেমির ছাত্ররা। এখনও নিঃশব্দে কাজ করে চলেছে এই অ্যাকাডেমি। কে বলতে পারে, আগামী দিনের কোনও তারকা উঠে আসবেন না এই অ্যাকাডেমি থেকেই?