‘দেশের জার্সিতে খেলার খিদে এখনও মরেনি’, ইডেনে কামব্যাক করতে মরিয়া শামি


রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: মাঝে আর একটা দিন। তারপরই ভারতের নীল জার্সি পরে মাঠে নেমে পড়বেন মহম্মদ শামি। নেমে পড়বেন, দীর্ঘ চোদ্দো মাস পর! ২০২৩ নভেম্বরে আহমেদাবাদের সেই কালান্তক ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের পর তো আর মাঠে নামতে দেখা যায়নি ভারতীয় পেসারকে।

এহেন মাহেন্দ্রক্ষণের প্রাক লগ্নে দাঁড়িয়ে ভারতীয় পেস বোলিংয়ের ‘নবাব’ যে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়বেন, তা আন্দাজ করা কঠিন নয়। এবং তিনি হয়ে পড়লেনও। সোমবার সিএবি-র অনুষ্ঠানে শামিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, চোটের সঙ্গে এত দীর্ঘ লড়াই জিতে তিনি ফিরলেন। অথচ দেখতে গেলে, তাঁর জীবনে অপূর্ণ তো কিছু আর নেই। অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু সেটা না করে ফিরে এলেন কোন জ্বালানিতে? শামি যে লম্বা উত্তর দিলেন, তার নির্যাস মাত্র এক শব্দে হয়। ‘ক্ষুধা!’

‘‘আমার কী মনে হয় জানেন? দেশের হয়ে খেলার যে খিদে, সেটা একজন ক্রিকেটারের কখনও শেষ হয় না। আমারও হয়নি। আর যত চোট-আঘাতই লাগুক না কেন, খেলাটার প্রতি যদি আপনার ভালোবাসা থাকে, খেলাটা যদি নিষ্ঠা সহকারে আপনি খেলেন, তাহলে ফিরে আপনি একদিন না একদিন আসবেনই,’’ বলেন শামি। একদিক থেকে দেখলে, ভুল কিছু বলেননি ভারতীয় পেসার। রীতিমতো অসাধ‌্যসাধনই করে ছেড়েছেন তিনি। অস্ত্রোপচার থেকে মাসের পর মাস ধরে রিহ‌্যাব, সব কিছু শেষে ফের নতুন করে চোটে আক্রান্ত হওয়া এবং নতুন করে ফের রিহ‌্যাব- সমস্ত চোয়ালচাপা সংকল্প নিয়ে করে যেতে হয়েছে শামিকে। ক্রিকেটের একনিষ্ঠ পূজারী না হলে যা সম্ভব হত না।

‘‘দেশের হয়ে খেলার পর রাজ‌্যের হয়ে খেলার পর আমার তো কখনও মাথাতেও আসেনি যে খেলাটা ছেড়ে দেব। ক্রিকেটের সঙ্গে আলাদা হওয়ার কথা ভাবতেও পারি না। বরং সব সময় ভাবি যে, কী করে ফেরা যায়। আমি কী ভাবি জানেন? আমি ভাবি যে, যত ম‌্যাচই খেলি না কেন, সেটা আমার জন‌্য কম। কারণ, একবার খেলা ছেড়ে দিলে কে বলতে পারে, দ্বিতীয়বার মাঠে নামার হয়তো সুযোগই পাব না,’’ বলার সময় আবেগতাড়িত দেখায় ভারতীয় তারকাকে। চোদ্দো মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাঁর প্রত‌্যাবর্তন ঘটছে ইডেনে। ঘরের মাঠে। যে মাঠ তাঁর ধাত্রীভূমি। লাগছে কেমন? ‘‘আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি। উত্তরপ্রদেশে আমার জন্ম। কিন্তু আমাকে তৈরি করেছে বাংলা। আমাকে মহম্মদ শামি করেছে ইডেন। আমি আজ যে এখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি, সেটা বাংলার জন‌্য। ইডেনের জন‌্য। প্রতিদানে আমি একটা জিনিসই দিয়েছি ইডেনকে। বাংলাকে। আনুগত‌্য।’’

Leave a Reply