স্টাফ রিপোর্টার: সল ক্রেসপো। আনোয়ার আলি। মহম্মদ রাকিপ। প্রভাত লাকড়া। ক্লেটন সিলভা। হিজাজি মাহের। একজন-দু’জন নয়। চোটের জন্য প্রথম দলের অন্তত ছ’জন ফুটবলারকে শুক্রবারের মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচে পাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গল। সঙ্গে কার্ড সমস্যায় নেই মিডফিল্ডার জিকসন সিংও। ফলে নিজের পুরোনো দলের বিরুদ্ধে দল সাজানোই এখন চ্যালেঞ্জ কোচ অস্কার ব্রুজোর জন্য।
মরশুমের শুরু থেকেই চোট সমস্যা ভোগাচ্ছে লাল-হলুদকে। আর মুম্বই ম্যাচের আগে দল প্রায় ‘মিনি হাসপাতাল’। আইএসএলের সুপার সিক্সে থাকার জন্য এখন আর পয়েন্ট নষ্ট করার সুযোগ নেই। শুধু তাই নয়, মরশুমের বাকি সময়ের জন্য ক্লেটন ও হিজাজিকে পাওয়া যাবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। যদি তাঁরাও ছিটকে যান, তবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের নকআউট এবং সুপার কাপেও যে ভুগতে হবে লাল-হলুদকে, বলাই বাহুল্য।
এই পরিস্থিতিতে ‘ব্যালান্স’ করার উপর জোর দিচ্ছেন কোচ অস্কার। “আমি আগেও বলেছি, আমাদের প্রতিটা ম্যাচের জন্য নতুন করে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। প্লেয়াররা নিজেদের স্বাভাবিক পজিশনের বাইরে এসে খেলছে। ফলে আমাদের সবদিকেই ব্যালান্স করতে হচ্ছে। গতি এবং নিয়ন্ত্রণ, শক্তি এবং তৎপরতা, সব বিভাগেই ভারসাম্য আনতে হবে।” কিন্তু কেন এত চোট সমস্যায় ভুগছে লাল- হলুদ? মরশুমের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারই চোটের জন্য মাঠের বাইরে কাটিয়েছেন। কেন আইএসএলের সব দলের মধ্যে প্রথমে প্রাক্-মরশুম অনুশীলনে নেমেও এমন দশা তাঁদের? এই প্রশ্নে অবশ্য স্পষ্ট কোনও জবাব দিচ্ছেন না অস্কার। তাঁর কথায়, “আমরা এখন ফুটবলারদের চোটের অবস্থা পর্যালোচনা করছি। কার চোট কতটা, সারতে কতদিন সময় লাগবে, পুরোপুরি ফিট হয়ে মাঠে ফিরবে কবে, সেসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফলাফল অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ করব।”
আইএসএলে এখনও পর্যন্ত পরপর ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে নামতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। কারও চোট, কারও কার্ড সমস্যায় বদল করতে হয়েছে দলে। ব্যতিক্রম হবে না মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচও। অস্কারের সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথা ডিফেন্স নিয়ে। হিজাজির পরিবর্তে ডিপ ডিফেন্সে হেক্টর ফিরছেন। কার্ড সমস্যায় শেষ ম্যাচ খেলতে না পারা নন্দকুমারকে ফের দেখা যাবে রাইট ব্যাক হিসাবে, যে পজিশনে শেষ ম্যাচে খেলেছেন জিকসন। অন্যদিকে, ক্লেটনের পরিবর্তে ডেভিড ফিরবেন প্রথম একাদশে। এর বাইরে বাকি পজিশনে বদল হওয়ার সম্ভাবনা কম। আসলে বদল করার মতো রসদও তো নেই অস্কারের হাতে। গোলের জন্য দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস, পিভি বিষ্ণু, রিচার্ড সেলিসের দিকেই তাকিয়ে থাকছে ইস্টবেঙ্গল।
শেষ দু’ম্যাচের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে সমর্থকদের ভরসা আদায় করেছেন সেলিস। গোলের দেখা না পেলেও এফসি গোয়া এবং কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটা ভালো সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি। এমনকী কেরালা ম্যাচে একটি শট পোস্টে লেগে না ফিরলে লাল-হলুদ জার্সিতে প্রথম গোলটা করে ফেলতেন তিনি। এবার আরব সাগর পাড়ের আরও এক দলের বিরুদ্ধেও তাঁর উপর বাজি ধরছে লাল-হলুদ শিবির। ভেনেজুয়েলার এই ফরোয়ার্ড বলছিলেন, “আমি ভারতীয় ফুটবল নিয়ে মিকুর কাছে কিছু কথা শুনেছি। ও বেঙ্গালুরু এফসি-র হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিল। তবে এখানে আসার আগে ইস্টবেঙ্গলের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ কিছু জানা ছিল না।” তবে এবার লাল-হলুদের দিন বদলে দিতে চাইছেন তিনি।