ইতালি ভিসা খরচ কত টাকা এই সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আপনারা যারা ইতালি যেতে যান কিন্তু ভিসা জটিলতার কারনে যেতে পাচ্ছেন না তারা এই আঅটিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
আমাদের বাংলাদেশ থেকে অনেকে ইতালি যেতে চাচ্ছেন কেউ কাজ করার জন্য, কেউ ভ্রমন করার জন্য, কেউ চিকিৎসা করার জন্য, কেউ পড়াশোনা করার জন্য।
কিন্তু, আপনাদের ধারণা নেই ইতালির ভিসা নিতে গেলে কত টাকা খরচ হবে। তাই ইতালির ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এই আর্টিকেলে জানতে পারবেন।
ইতালি ভিসা খরচ 2022
আপনারা যারা ইতালি যেতে চাচ্ছেন তাদের প্রথমে জানতে ইতালি ভিসা খরচ কত টাকা। কারণ, ইতালি যেতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়।
তবে, মনে রাখবেন ভিসা খরচ সম্পূর্ণ রূপে নির্ভর করবে ইতালির ভিসা ক্যাটাগরির উপর। সাধারণত ইতালির দুই ধরনের ভিসা প্রচলিত রয়েছে।
একটি হলো ইতালি সিজিনাল ভিসা এবং অপরটি হলো নন সিজিনাল ভিসা।
আপনারা যারা ইতালি নন সিজিনাল ভিসায় যেতে চান তাদের ৯ লাখ থেকে ১০ লাখের মতো খরচ হবে। আর যারা সিজিনাল ভিসায় ইতালি যেতে চান তাদের ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ হবে।
এবার আপনার মনে প্রশ্ন তৈরি হবে নন সিজিনাল ভিসা এবং সিজিনাল ভিসা কি? চলুন নিচে থেকে জেনে আসি।
ইতালি নন সিজিনাল ভিসা কি?
যারা কাজ করার জন্য ইতালি যেতে চাচ্ছেন তারা নন সিজিনাল ভিসায় জন্য আবেদন করবেন। কারণ, নন সিজিনাল ভিসায় ৫-৬ বছর ইতালি থাকতে পারবেন।
ইতালি সিজিনাল ভিসা কি?
যারা ইতালি ভ্রমন, চিকিৎসা, ব্যবসা সহ অন্যান্য কাজে ইতালি যেতে চাচ্ছেন তারা সিজিনাল ভিসার আবেদন করবেন। সিজিনাল ভিসায় ইতালি গেলে সর্বচ্ছ ৬ থেকে ৯ মাস ইতালি থাকতে পারবেন।
ইতালি ভিসার প্রকারভেদ
আমারা জেনেছি ইতালি ভিসা দুই প্রকার হয়ে থাকে। একটি ইতালি নন সিজিনাল ভিসা এবং অপরটি ইতালি সিজিনাল ভিসা।
তবে, ইতালি সিজিনাল ভিসার মধ্যে আবার কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে –
- ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা
- ইতালি কৃষি ভিসা
- ইতালি মেডিকেল ভিসা
- ইতালি স্পন্সর ভিসা
- ইতালি টুরিস্ট ভিসা
তাহলে চলুন এই প্রত্যেক প্রকার ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে আসি।
ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা
বাংলাদেশ থেকে প্রত্যেক বছর হাজার হাজার স্টুডেন্ট বাহিরের দেশে উচ্চ শিক্ষা নেওয়া জন্য বিদেশ যায়। একই ভাবে আপনিও উচ্চ শিক্ষার জন্য ইতালি যেতে পারবেন।
তবে, ইতালি স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আপনার বেশ কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন হবে। যেমন আপনার SSC এবং HSC পরিক্ষায় ভালো রেজাল্ট দেখাতে হবে।
তাছাড়া, আপনার বৈধ পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে। মনে করুন, আপনি ইতালির কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চাচ্ছেন।
সেই বিশ্ববিদ্যালয় যদি আপনাকে গ্রহণ করে তারা আপনাকে একটি আমন্ত্রণ পত্র পাঠাবে। সেই আমন্ত্রণ পত্র ভিসা করার সময় জমা দিতে হবে। তাহলে আপনি সহজে ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা পেয়ে যাবেন।
ইতালি কৃষি ভিসা
আপনারা হয়তো জানেন ইতালির নাগরিকরা ১০০% শিক্ষিত। বিশেষ করে সেখানে কৃষি কাজ করার লোকের সংখ্যা খুবই কম।
তাই প্রত্যেক বছর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ দেয় ইতালি। আপনার যদি কৃষি কাজে ভালো অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে কৃষি কাজের জন্য ভিসা করে ইতালি যেতে পারেন।
ইতালি মেডিকেল ভিসা
আমরা সবাই জানি ইতালি চিকিৎসার দিক থেকে অনেক উন্নত একটি দেশ। তাই বাংলাদেশ থেকে যারা চিকিৎসার জন্য ইতালি যেতে চাচ্ছেন তারা ইতালি মেডিকেল ভিসার আবেদন করুন।
তবে, ইতালি মেডিকেল ভিসা পেতে আপনার কিছু কথার প্রয়োজন হবে। মনে করেন, আপনি অসুস্থ এবং ডাক্তারের কাছে গিয়েছেন। বাংলাদেশের ডাক্তার যদি বলে ইতালির ডাক্তারের পরামর্শ নিতে তাহলে আপনি সহজে ইতালি মেডিকেল ভিসা পেয়ে যাবেন।
কিন্তু, এই মেডিকেল ভিসা নেওয়ার আগে আপনাকে “ইতালি ভিসা খরচ” সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ, ইতালি মেডিকেল ভিসা নেওয়ার জন্য আপনার প্রচুর টাকার প্রয়োজন হবে।
তাই যাদের টাকা রয়েছে এবং বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন না তারা ইতালি মেডিকেল ভিসা নিয়ে চিকিৎসার জন্য ইতালি যেতে পারবেন।
ইতালি স্পন্সর ভিসা
আমি আগেই বলেছি ইতালিতে কাজের মানুষের অনেক অভাব। তাই প্রত্যেক বছর বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে প্রচুর জনশক্তি আমদানি করে ইতালি সরকার।
তবে, বাংলাদেশ থেকে স্পন্সর ভিসায় ইতালি যেতে হলে আপনাকে জানতে হবে ভিসা খরচ কত টাকা। কারণ, ইতালিতে যেতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন।
তাছাড়া, আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে চান তারা অবশ্যই সরকারি ভাবে ইতালি যাবেন।
তবে, এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে একটি বৈধ পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, যে কোম্পানির কাজ করবেন সেই কোম্পানির অ্যাপোয়েমেন্ট লেটার এবং ১৮ বছরের উপর বয়স হতে হবে।
ইতালি টুরিস্ট ভিসা
অনেকে আছেন যারা দেশ বিদেশে ভ্রমন করতে ভালোবাসেন। যারা বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভ্রমন করতে চান তারা টুরিস্ট ভিসায় ইতালি ভ্রমন করতে পারবেন।
ইতালি ভ্রমন করার জন্য ৩ থেকে ৬ মাসের মেয়াদে আপনারা ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে, টুরিস্ট ভিসার খরচের বিষয়ে জানতে হবে।
সহজে ইতালি টুরিস্ট ভিসা পেতে কোনো ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যদি আপনার যোগাযোগ থাকে এবং আপনার বৈধ পাসপোর্ট থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ইতালি ভিসা পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে। এবং পাসপোর্টের মেয়াদ ১ বছরের বেশি থাকতে হবে।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকার পরে আপনাকে জানতে হবে “ইতালির ভিসা খরচ” কত টাকা। মনে রাখবেন, ভিসা খরচ জানার আগে আপনাকে জানতে হবে কোন ক্যাটাগরির ভিসা নিতে চাচ্ছেন।
উপরে ইতালি ভিসার প্রকারভেদ সম্পর্কে বলেছি। আপনি যদি ভ্রমন, চিকিৎসা করার জন্য ইতালি যেতে চান তাহলে ইতালি সিজিনাল ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
আর যদি কাজ করার জন্য যেতে চান, তাহলে ইতালি নন সিজিনাল ভিসার জন্য আবেদন করবেন। কারণ, নন সিজিনাল ভিসায় ৫-৬ বছর থাকতে পারবেন।
আর সিজিনাল ভিসায় ৩-৬ মাস ইতালি থাকতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি চাইলে স্টুডেন্ট ভিসায় ইতালি যেতে পারবেন।
এর জন্য আপনার কি কি যোগ্যতা লাগবে সেটা উপরে আমি আলোচনা করেছি। স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে ইতালির কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে এডমিশন পেতে হবে।
ইতালি ভিসা চেক করার নিয়ম বা উপায়
আপনারা যারা ইতালি যেতে চাচ্ছেন এবং আপনার ভিসা বৈধ কিনা সেটা সহজে চেক করতে পারবেন। অনেকে আছেন ভূয়া ভিসা নিয়ে ইতালি গিয়ে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে।
তাই আমার পরামর্শ হলো আপনারা বিদেশে ভ্রমন করার আগে অবশ্যই পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক করে নিবেন।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সকল দেশের ভিসা অনলাইনে চেক করতে পারবেন। ঠিক একই ভাবে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ইতালি ভিসা চেক করার জন্য এই লিংকে যান।
এবার নিচের ছবির মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন।
এখানে পাসপোর্ট নাম্বার এবং লাস্ট নাম লিখে ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করলে ভিসার তথ্য দেখতে পাবেন।
ইতালি ভিসা আবেদন লিংক
আপনারা যারা ইতালি ভিসার জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন তারা এই লিংকে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
তাছাড়া এই ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ইতালি ভিসা চেক করতে পারবেন। উপরে আমি এই সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
শেষ কথা
আজকে আমরা জানলাম ইতালি ভিসা খরচ কত টাকা এর সম্পর্কে বিস্তারিত। এই সম্পর্কে যদি কোনো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
ভিসা সম্পর্কে আরো আর্টিকেল পড়ুন –