মনের জমা মেঘ বৃষ্টি হয়ে অঝোরে ঝরে পড়েছিল সেদিন রাতেই। হোটেলের ঘরে হাউহাউ করে কেঁদেছিলেন নেইমার (Neymar)।
Image Credit source: Twitter
দোহা: সার্বিয়ার বিরুদ্ধে খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছেড়েছিলেন। ক্যামেরায় ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়া গোড়ালির চিত্র স্পষ্ট। চোখের দু’কোণে টলমলে মুক্তোবিন্দু দেখা গিয়েছিল তখনই। ডাগআউটে বসে জার্সিতে মুখ ঢেকেছিলেন। মনে আশঙ্কার গাঢ় মেঘ। চোট কতটা গুরুতর? আদৌ বিশ্বকাপে আর খেলতে পারবেন তো? চিকিৎসকরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। মনের জমা মেঘ বৃষ্টি হয়ে অঝোরে ঝরে পড়েছিল সেদিন রাতেই। হোটেলের ঘরে হাউহাউ করে কেঁদেছিলেন নেইমার (Neymar)। সুখের দিনে খারাপ সময়ের কথা স্মরণ করে কথাগুলো বলেছেন খোদ ব্রাজিলিয়ান তারকা। সেলেকাওদের শেষ আটে পৌঁছে দেওয়ার নায়ক।
সার্বিয়ার খেলোয়াড়রা সেদিন চোটপ্রবণ নেইমারকেই টার্গেট করেছিল। পরিকল্পনায় সফলও তারা। নয়বার ফাউল। মাঠে যন্ত্রণায় লুটিয়ে পড়েছিলেন। এরপর ডাগআউটে বসে জার্সিতে মুখ ঢেকে কান্না। তার রেশ চলেছিল গোটা রাত। নেইমার বলেছেন, “ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমার চলতি মরসুমটা দারুণ কেটেছে। ভালো খেলছি। তার মধ্যে এমন চোট সত্যিই কষ্টদায়ক। সারারাত কেঁদে ভাসিয়েছিলাম। আমার পরিবার সেটা জানে। শেষ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক হয়েছে। আমার চেষ্টা সার্থক। সেদিন সকাল ১১টা পর্যন্ত ফিজিওথরাপিস্টের কাছে চিকিৎসার জন্য ছিলাম। পরের দিনগুলিতে ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসা চলত। একটা খেতাবের জন্য এই কষ্টগুলোও পুষিয়ে যায়।”
তিনি ব্রাজিলের প্রাণভোমরা। চোট পাওয়ার পর সাজঘরের আবহাওয়া কেমন ছিল? সাংবাদিক বৈঠকে নেইমার বলেছেন, “আমি চোট পাওয়ার পর হাজারো বিষয় ঘটেছে। ভয় তো ছিলই…চোট নিয়ে ব্যপক আশঙ্কায় ছিলাম। সতীর্থ এবং পরিবারের থেকে পূর্ণ সমর্থন পেয়েছি। অনেকে ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছেন। এগুলো আমাকে প্রাণশক্তি দিয়েছে। আমার জন্য এগুলো স্বস্তি বয়ে নিয়ে এসেছে। ওদের ধন্যবাদ দেওয়াটাও কম হবে। দলের জয়ের জন্য এখন থেকে নিজেকে নিংড়ে দেব। এখানে সেই লক্ষ্য নিয়েই এসেছি।”
চোটের আশঙ্কা কাটিয়ে প্রবলভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন নেইমার। সব ভয় দূরে সরিয়ে শেষ ষোলোর ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই নেমে পড়েন। তিনি যে তেতে রয়েছে তা এই ম্যাচ থেকেই স্পষ্ট। পেনাল্টি থেকে গোল করলেন। নিজের দেশের কিংবদন্তি পেলে ও রোনাল্ডোর পর তিনটি আলাদা আলাদা বিশ্বকাপে গোল করার নজির। ম্যাচের নায়ক হলেন তিনিই।