অঙ্কিতা ভকত যেন আর্চারির রিঙ্কু সিং, রয়েছে তাঁদের স্পেশাল কানেকশন


অঙ্কিতা ভকত যেন আর্চারির রিঙ্কু সিং, রয়েছে তাঁদের স্পেশাল কানেকশনImage Credit source: X

কলকাতা: একজনের ব্যাট ২২ গজে ঝড় তোলে। আর এক জনের তির করে লক্ষ্যভেদ। ক্রীড়া জগতের দু’টো মানুষকে নিয়ে কথা হচ্ছে। যাঁদের রয়েছে ছত্রে ছত্রে মিল। তাঁদের বয়স একই। তাঁদের পরিশ্রমও যেন একই। নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে দু’জনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। আপাতত এই দুই ক্রীড়াবিদ বিশ্বের দুই প্রান্তে রয়েছেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ খেলতে সে দেশে গিয়েছেন ভারতের তারকা ক্রিকেটার রিঙ্কু সিং (Rinku Singh)। আর অলিম্পিক খেলতে প্যারিসে ব্যস্ত রয়েছেন অঙ্কিতা ভকত (Ankita Bhakat)। ক্রীড়ামহল এখন বলাবলি করছে অঙ্কিতা ভকত যেন আর্চারির রিঙ্কু সিং হয়ে উঠেছেন।

কলকাতার সঙ্গে রিঙ্কু ও অঙ্কিতা দু’জনেরই বিশেষ যোগ রয়েছে। অঙ্কিতার তো বাড়ি সিঁথির মোড়ে। আর রিঙ্কু সিং যতই আলিগড়ের ছেলে হোন না কেন, কলকাতা যেন তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। কারণ, তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। রিঙ্কু ও অঙ্কিতার শুধু কলকাতা কানেকশনেই শেষ নয়। দু’জনের বয়স ২৬। তাঁরা দু’জনই বাঁ-হাতি। ভারতের তরুণ তুর্কি রিঙ্কু বাঁ-হাতি ক্রিকেটার। আর অঙ্কিতা বাঁ-হাতি আর্চার।

রিঙ্কু ও অঙ্কিতার গল্পও যেন কোথাও গিয়ে মিলেমিশে একাকার হয়েছে। দু’জনেরই অভাবের সংসার। রিঙ্কুর বাবা বাড়ি বাড়ি গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে সংসার চালান। আর অঙ্কিতার বাবা শান্তনুর দুধের দোকান। তিনি বাড়ি বাড়ি দুধ পৌঁছে দেন। অত্যন্ত গরীব ঘর থেকে দু’জনেরই উঠে আসা। কার্যত কিছু না পাওয়া থেকে অনেক কষ্টে সাফল্যের মুখ দেখেছেন রিঙ্কু-অঙ্কিতারা।

হানঝাউ এশিয়ান গেমসেও দু’জনের মধ্যে মিল পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে একদিকে ভারতের হয়ে সোনা জিতেছিলেন রিঙ্কু সিং। অন্যদিকে সেই এশিয়াড থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়নি অঙ্কিতাকে। আর্চারি টিম ইভেন্টে তিনি হানঝাউ থেকে ব্রোঞ্জ নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন।

২০১৫ সালে অঙ্কিতাকে বাংলা ছাড়তে হয়েছিল। বাংলার হয়ে তিনি সুযোগ পাচ্ছিলেন না। সেই সময় যদি তিনি যদি বাংলা ছেড়ে ঝাড়খন্ডের হয়ে না খেলতেন, তা হলে হয়তো তাঁর প্যারিস অলিম্পিকেও খেলা হত না। এই প্রথম বার অলিম্পিকে নেমেছেন বাংলার মেয়ে। পদকের আশাও জাগাচ্ছেন তিনি। মেয়েদের টিম ইভেন্টে দীপিকা কুমারী, ভজন কৌরের সঙ্গে দিন দু’য়েক আগেই তিরন্দাজিতে নেমেছিলেন অঙ্কিতা। ভারতের তিন মেয়ের মধ্যেই তিনিই ছিলেন সবচেয়ে উজ্জ্বল। ১১ নম্বরে শেষ করেন তিনি। ভারতীয় টিম কোয়ার্টার ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করেছে। আর্চারি থেকে যদি অঙ্কিতার হাত ধরে পদক আসে দেশে তা হলে সারা ভারতবর্ষ মাথায় তুলে নেবে।

ভারতের মেয়েরা আর্চারির কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর অঙ্কিতা বলেন, ‘আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছি। একটু অ্যাডভান্টেজ আছে ঠিকই। কিন্তু আমরা জানি প্রতিপক্ষ কঠিন হবে। আমাদের রিল্যাক্স করার জায়গা নেই। ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে লড়াই তো একা একা হয়। কিন্তু আমরা তখনও নিজেদের মধ্যে কথা বলি। আমাদের মধ্যে কথা হয় সামনে যে প্রতিপক্ষ রয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে আমাদের কারও খেলার অভিজ্ঞতা আছে কিনা। এটাও আমাদের সকলের কাজে দেয়।’

Leave a Reply